ঝড়ের কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগর থেকে কূলে ফেরার সময় ১৯ জেলেসহ দুটি মাছধরা ট্রলার ডুবির খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই সাতরিয়ে উঠতে পারলেও ছয় জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। বুধবার রাতে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী সংলগ্ন এলাকায় এফবি পূর্ণিমা এবং বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সাগরের ১ নম্বর ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় এফবি আল-ছাত্তার ট্রলার ডুবে যায়। ন্ঁিখোজ ট্রলারের সকল জেলেই পিরোজপুর জেলার বলে নিশ্চিত করেছেন, এফবি আল-ছাত্তার ট্রলারের মালিক পিরোজপুরের পাড়েরহাট মৎস্য বন্দরের ইকবাল মিয়া। এ দিকে বঙ্গোপসাগরে দুইটি ট্রলার ডুবির ঘটনায় পিরোজপুরের নিখোঁজ জেলেদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ট্রলার ডুবির খবর পরিবারের সদস্যদের কাছে পৌছার পর তারা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
এফবি আল-ছাত্তার ট্রলারের মালিক ইকবাল মিয়া জানান, তার ট্রলারটি গত মঙ্গলবার সাগরে যায়। বুধবার বিকেল থেকে আবহাওয়া খারাপ হতে থাকে। ট্রলারটি গভীর সাগর থেকে কুয়াকাটায় ফেরার সময় ফেয়ারওয়ে বয়ার কাছাকাছি এলে ঢেউয়ের আঘাতে তলা ফেটে ডুবে যায়। ট্রলারের ১৯ জন জেলের মধ্যে ১২ জনকে এফবি অনিমা নামের একটি ট্রলারের জেলেরা উদ্ধার করলেও ছয়জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিখোঁজদের নাম জানা যায়নি। উদ্ধার হওয়া জেলেদের পাথরঘাটায় নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, বুধবার সন্ধ্যায় তাদের এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী নিমাই চন্দ্র দাসের এফবি পূর্ণিমা নামের ট্রলারটি সুন্দরবনের কচিখালীর কাছাকাছি সাগরে ডুবে যায়। ওই ট্রলারের ১০ জেলেকে অন্য একটি ট্রলারের জেলেরা উদ্ধার করেছে।
উদ্ধার হওয়া এফবি আল-ছাত্তার ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ ফাইজুল জানান, আবহাওয়া খারাপ দেখে তারা তীরে আসার পথে পায়রা বন্দর থেকে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের গভীরে তাদের ট্রলারটি ডুবে যায়। তাদের মধ্যে ১২ জনকে ভাসমান অবস্থায় এফবি অনিমা ট্রলারের মাঝি ইলিয়াস খান উদ্ধার করে পাথরঘাটা মৎস্য বন্দরে নিয়ে আসেন। তিনি ধারণা করছেন, নিখোঁজ ছয় জেলের সলিল সমাধি হয়েছে।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন- ফায়েক (২৮), মনির (১৭), হানিফা (১৭), সঞ্জয় (৩০), আনোয়ার (৪৬), বাদশাহ (৩৫)। এদের মধ্যে চার জনের বাড়ি পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা ইউনিয়নে, একজনের বাড়ি সিকদারমল্লিক ইউনিয়নে এবং অন্যজনের পার্শবর্তী নাজিরপুর উপজেলার শেখ মাটিয়া ইউনিয়নে।
এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া ট্রলার ডুবির পর সরকারি কোন তৎপরতা না থাকায় ক্ষুব্দ ট্রলার মালিক ও জেলেরা।
Leave a Reply