news2bdgazette@gmail.com সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১

চুরির আশঙ্কায় রাত জেগে পেঁয়াজ খেত পাহারা

গোদাগাড়ী

প্রকাশিত:
১৩ ডিসেম্বার ২০২৩, ০৯:৪৪

সংগৃহিত ছবি

বাজারে পেঁয়াজের আকাশছোঁয়া দাম। অনেক এলাকায় খেত থেকে পেঁয়াজ চুরি হচ্ছে। চুরি ঠেকাতে চাষিরা খেতে পাহারা বসিয়েছেন। রাত জেগে তারা তাঁবুতে বসে পেঁয়াজ পাহারা দিচ্ছেন। এই চিত্র রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার অনেক এলাকায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের বিদিরপুর বাজারে গত রবিবার প্রতি কেজি গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ১৬০-১৭০ টাকা এবং তাহেরপুরী পেঁয়াজ ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে এই হাটে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছির ১০০ টাকা।

উপজেলার হরিশংকরপুর গ্রামের কৃষক হযরত আলী পেঁয়াজ চুরির ভয়ে জমির পাশে তাঁবু টানিয়ে রাত-দিন পাহারা দিচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায়, তিনি তাঁবুর সামনে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ১০ কাঠা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন তিনি। আশা করছেন, সেখানে অন্তত ৫০ মণ পেঁয়াজ পাবেন।

এখানে হযরত আলীর ১০ বিঘা জমিতে ফসল রয়েছে। পেঁয়াজ ছাড়াও ভুট্টা, সরিষা ও টম্যাটো চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল সকাল ৯টার দিকে পাইকারি ক্রেতারা এসেছিলেন। তারা ১৩০ টাকা কেজি দরে দাম দিতে চেয়েছেন। কিন্তু পরিপক্ব না হওয়ায় তিনি পেঁয়াজ বিক্রি করেননি। আশা করছেন, পেঁয়াজ আরও বড় হবে, দামও বেশি পাবেন। খেতের পেঁয়াজ এখনো পরিপক্ব হয়নি।

 পেঁয়াজ পরিপক্ব হতে ১০-১৫ দিন সময় লাগবে। বেণীপুর গ্রামের কৃষক মাজহারুল ইসলাম দুই বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনিও ঐ জমিতে ২৪ ঘণ্টা পাহারা বসিয়েছেন। তিনি বলেন, দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেই পেঁয়াজ নিয়ে একটু উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।

চুরি হয়ে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় পাহারা জোরদার করতে হয়েছে। উপজেলার পৌর এলাকার চাষি গোলাম রাব্বানী পাঁচ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে তার জমি থেকে ছয় মণ পেঁয়াজ চুরি হয়ে গেছে। এর পর থেকে তিনি জমিতে পাহারা বসিয়েছেন।

এছাড়া গত কয়েক দিনে উপজেলা দেওপাড়া ইউনিয়নের ঈশ্বরীপুর ব্লকের গলাই গ্রাম, ধামিলা গ্রাম, হাতীবান্ধা গ্রামের কয়েক জন কৃষকের খেত থেকে পেঁয়াজ চুরি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ৯ হাজার ৭৫০ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে গোদাগাড়ীতে চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩২০ বিঘা জমিতে। ইতিমধ্যে ২৫০ বিঘা থেকে পেঁয়াজ তোলা হয়েছে। প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে ১২০ থেকে ১২৫ মণ।

কৃষকের পেঁয়াজ পাহারা দেখতে সন্ধ্যায় হরিশংকরপুর মাঠে এসেছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমদ। তিনি বলেন, খেতের পেঁয়াজ এখনো পরিপক্ব হয়নি। তবে বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার খবর শুনে চাষিরা পেঁয়াজ তোলার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছেন।

বাংলা গেজেট/এফএস


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর