news2bdgazette@gmail.com বৃহঃস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১

চরের মানুষের সংগ্রামী জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত:
৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৫৩

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী শহর পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর এই শহরটি সিল্কসিটি, গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি ও শিক্ষা নগরী হিসেবেও পরিচিত। কিন্তু পদ্মা নদীর এক পার থেকে অন্য পারে যাতায়াত করা এখানকার মানুষের জন্য প্রতিদিনের এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে, রাজশাহীর ৮টি চর, যা পদ্মা নদীর মাঝে অবস্থিত, তাদের বাসিন্দারা প্রায়ই জীবিকার তাগিদে, শিক্ষার লক্ষ্যে অথবা অন্যান্য প্রয়োজনে নদী পারাপারের ঝুঁকি নিতে বাধ্য হন।

চরের মানুষের মূল পেশা হল কৃষি, মৎস্য চাষ এবং নানা ধরনের শিল্প। তবে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে এক কঠিন জীবনযাত্রা লুকিয়ে আছে। নৌকা এই চরের মানুষের প্রধান যাতায়াতের মাধ্যম, তবে সবসময় নৌকা পাওয়া সম্ভব হয় না। বর্ষাকালে পানির প্রবল স্রোত এবং অন্যান্য সময়ে নৌকার অভাবে চরের মানুষজনকে প্রায়ই পদ্মার বুকে হেঁটে পারাপার হতে হয়। এ সময় তারা প্রায়ই জলজ প্রাণী এবং নানা ধরনের বিপদের মুখে পড়েন।

বিশেষ করে, শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বিপদজনক এই পথ অতিক্রম করে স্কুলে যায়। শিক্ষা অর্জনের এই অদম্য ইচ্ছা তাদের জীবনের এক বিশাল চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও, চিকিৎসা, বাজার করা এবং অন্যান্য দৈনন্দিন প্রয়োজনের জন্যও তাদের পদ্মা নদী পারাপার হতে হয়।

সরকার এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের তরফ থেকে এই চরাঞ্চলের উন্নতির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও পর্যাপ্ত নৌকা, সেতু নির্মাণ এবং যোগাযোগের অন্যান্য সুবিধাদি প্রদানের দিকে আরও মনোযোগী হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

রোববার (৬ এপ্রিল) বাঘা উপজেলার বিভিন্ন সড়কঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এখন শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় নদীতে পানি নেই। তাই এই ৮ চরের মানুষজন পদ্মা নদী পায়ে হেঁটে পারাপার হচ্ছেন।

জানা যায়, উপজেলার পদ্মার চকরাজাপুর ইউনিয়নের ৮ চরের প্রায় ১৮ হাজার মানুষের বসবাস। শুষ্ক মৌসুমে তারা পায়ে হেঁটে নদী পারাপার হয়, আর বর্ষাকালে পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

বর্ষায় নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা নৌকা। প্রতিবছর খরস্রোতা পদ্মা নদী পারাপারে নৌকা ডুবিতে একাধিক ব্যক্তি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। চার মাস আগেও নৌকা দিয়ে পারাপার করতে হতো। তবে চলতি শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি না থাকায় পদ্মা এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।

কালদাসখালী চরের গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রতি বছর পদ্মা উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে বন্যাসহ নদী ভাঙনে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভারে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে উভয় সংকটে পড়তে হয়েছে।

চকরাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবলু দেওয়ান বলেন, সড়কঘাটের খেয়াঘাট থেকে চকরাজাপুর দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার। ২ মাস আগেও হাজার হাজার চরের মানুষ ব্যবসা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে এ খেয়া ঘাট থেকে নৌকাযোগে পদ্মা নদী পার হয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতেন। ২ মাসের ব্যবধানে পদ্মা শুকিয়ে ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। ফলে এলাকাবাসীকে পদ্মার চর পায়ে হেঁটে পারাপার হতে হচ্ছে।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর