news2bdgazette@gmail.com বৃহঃস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১

জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে পুরাতন বই বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত:
২৫ ডিসেম্বার ২০২৩, ১৮:৩৩

ছবি: সংগৃহীত

পদ্মা নদীর কোল ঘেষে অবস্থিত রাজশাহীর সোনাদিঘী মোড়। যা পুরাতন বইয়ের মার্কেট বা বাজার নামে পরিচিত। নগরীর এই ঐতিহ্যবাহী পুরাতন বইয়ের দোকানগুলো নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত পরিবারের একমাত্র ভরসাস্থল। স্বল্প দামে ভালো বই পাওয়ায় সবাই এখানে এসে ভিড় জমান। আর এই শিক্ষার্থীদের বই কেনার অর্থ দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন শত শত পরিবার।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, একাডেমিক, এডমিশন, জব প্রিপারেশনসহ সব ধরনের বই সারি সারি সাজানো আছে সেখানে। নতুন বইয়ের দোকানগুলো কাছাকাছি হওয়ায় সব সময় শিক্ষার্থীদের আনাগোনাও দেখা যায় চোখে পড়ার মতো। এখানে প্রায় শতাধিক পুরোনো বইয়ের দোকান আছে। যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার বই কেনাবেচা হয়। দামে কম হওয়ার বইপ্রেমীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এসব অস্থায়ী বইয়ের দোকান। সব ধরণের ক্রেতারাই এসব দোকান থেকে বই সংগ্রহ করছেন।

১৯ বছর ধরে পুরাতন বই বেচাকেনা করছেন ফারুক হোসেন। তিনি জানান, সোনাদীঘি মোড়ে এই পুরাতন বইয়ের দোকান প্রায় ৫০ বছরের ও বেশি পুরানো। তবে সঠিক তথ্য জানা নেই। হয়তো আরও বেশিদিনের হতে পারে এই বইয়ের বাজার। এই বাজারে প্রায় ৯০ দশকেরও পুরাতন বই পাওয়া যায়। পুরাতন বই বেশি কেনেন উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র-ছাত্রীরা। তবে ১ম শ্রেণির বই থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত সকল বই এখানে পাওয়া যায়।

তিনি আরও জানান, তাদের দৈনিক ৪-৫ হাজার টাকার মত বই বিক্রি হয়। পুরাতন বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় মে, জুন ও জুলাই মাসে। এই সময় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শুরু হয়। এছাড়া অনার্সে ভর্তি চলে। ফলে তাদের বেচা-কেনা তুলনামূলক বেড়ে যায়।

আরেক বই বিক্রেতা খাইরুল ইসলাম বলেন, 'পুরাতন বই বিক্রি করে বেশি লাভ হয়না। প্রতিদিন ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকার মত বিক্রি হয়। প্রতিদিন ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকার বই কেনা হয়। এর মধ্যে তাদের কর্মচারীর বেতন, দোকান ভাড়াসহ অন্যন্য দিতে হয়।'

খাইরুল জানান, তাদের বেশিরভাগ বই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কেনেন। আর পাইকারি বই কেনার দরকার হলে তারা বগুড়া বা ঢাকার নীলক্ষেত থেকে বই কেনেন। তবে নির্বাচনের কারণে পুরাতন বইয়ের বাজার কম চলছে। বিশেষ করে বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীরা বাসায় চলে যাওয়ায় ব্যবসা অনেক ধীর গতিতে চলছে বলে জানান তিনি।

প্রায় ৩৫ বছর থেকে এখানে বই বিক্রি করেন মো. ইয়ামিন হোসেন। তিনি জানান, তার দোকানে বেশিরভাগ পুরাতন বই থাকে মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের।বিশেষ করে যেসব বই পরিবর্তন হয়না সেসব বই বেশি বিক্রি হয়।

বাংলাদেশের শিক্ষা অধিদপ্তরের নতুন কারিকুলাম প্রকাশিত বই আসায় তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ করে বলেন, 'নতুন কারিকুলামের বই সম্পূর্ণ নতুন হয়, এই নতুন সিলেবাসের সাথে পুরাতন কোন বইয়ের মিল থাকে না। ফলে পুরাতন বইগুলো কেনার মত কেউই থাকে না। আমাদের এই বইগুলো কেজি দরে বিক্রি করতে হয়।'

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর