news2bdgazette@gmail.com বৃহঃস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১

ফুটপাতে শীতের পিঠার সমাহার

ঐশী ইসলাম

প্রকাশিত:
৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৯:০৪

ছবি: সংগৃহীত

এখন চলেছ শীতকাল। শীতের সতেজ শাকসবজি আমাদের যেমন আকৃষ্ট করে, ঠিক তেমনি শীতের পিঠাও আমাদের জন্য বাড়তি আনন্দ এনে দেয়। তবে সংকট হচ্ছে চাহিদা ও পছন্দ মতো শীতের পিঠা সংগ্রহ করা অনেকটা কষ্টকর। অগ্রহায়ণের নতুন ধানের চালের পিঠা না খেলে অসম্পূর্ণ থাকে বাঙালিয়ানা। একসময় শহর বা গ্রামের ঘরে ঘরে তৈরি হতো নানান ধরনের বাহারি সব স্বাদের পিঠা। বাড়ি বাড়ি ধুম পরতো পিঠাপুলি খাওয়ার। আধুনিক ইন্টারনেটের যুগে ইউটিউব থেকে বাড়ির মা-বোনেরা নানা রেসিপি দেখে রেসিপি তৈরিতে ঝুঁকে পড়েছে। ফলে দেশীয় সব পিঠা এখন আর বাসাবাড়িতে খুব একটা তৈরি হয় না। তবে এসব পিঠার কদর এখন ফুটপাতের দোকানগুলোতে দেখা যাচ্ছে।

প্রতি বছর শীতের মৌসুমে আসলেই শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে এসব পিঠার দোকান লক্ষ্য করা যায়। শুধু শহরের মোড়েই নয়, শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লাতেও একশ্রেণির মানুষ এসব পিঠা তৈরি করে বাড়তি আয় করছে। এসব পিঠার দোকানে ভিড় করে শহরের  নানা পেশার মানুষ।

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ও শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীর কাটাখালি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সেখানকার জামাল সুপার মার্কেটের আশে পাশে জমে উঠেছে পিঠা পুলির আমেজে।

এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুশলি পিঠা বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়,  নারকেল পিঠা বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়, সুজি পিঠা বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়, চীনা পিঠা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায় ও জর্দা পিঠা ৩৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এসব পিঠার দোকানে মাঝেমধ্যে এত ভিড় হয় যে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করে পিঠা খেয়ে থাকেন এবং বাড়ির জন্য নিয়ে যান।

এসব মৌসুমি পিঠা ব্যবসায়ীরা শীতের ঠিক আগ থেকে শুরু করে এবং শীতের শেষ পর্যন্ত তাদের ব্যবসা চালিয়ে যান। এতে তারা শীত মৌসুমে বাড়তি আয় করে থাকেন বলে জানান স্থানীয় পিঠা ব্যবসায়ীরা।



তানাফ ও তার মামা বাচ্চু প্রায় দেড় মাস ধরে সেই স্টলে পিঠাপুলি বিক্রি করছেন। তারা জানান, শীতের পিঠা তৈরি করে খাওয়ার মতো অবস্থা অনেক পরিবারেরই নেই। আর সে কারণে শীতকালে বিভিন্ন স্থানে পিঠা উৎসব বা পিঠা মেলার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ে এবং মানুষ সেখান থেকে পিঠা সংগ্রহ করে থাকে। গ্রামীণ জীবনেও শীতকালে তেমন একটা পিঠা-পায়েসের আয়োজন এখন আর করা হয় না। একারণে আমরা এখানে ঐতিহ্য ধরে রাখতে পিঠা বিক্রির আয়োজন করেছেন।

তারা বলেন, এখানে নানা রকম পিঠা পাওয়া যাচ্ছে। শিশু কিশোর ও বয়স্করাসহ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই এসব দোকানের নিয়মিত ক্রেতা।

পিঠাপুলি নিতে এসেছেন দম্পত্তি নাজমুল ও শাইমা। তারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই পিঠা এখন আর দেখাই যায় না এতো স্বল্প দামে এই পিঠা পেয়ে আমরা অনেক খুশি। স্থায়ী দোকান কিংবা ফুটপাতের দোকান থেকে প্রতিনিয়ত শীতের পিঠা কিনে তার সন্তানদের রসনা মেটাচ্ছে। সন্তানরাও দোকানের পিঠা খেয়ে আত্মতৃপ্ত হচ্ছে। তবে ঘরের তৈরি শীতের পিঠা খাওয়ার জন্য গ্রামে যাওয়ার সুযোগও অনেকের নেই। আমরা দুজনেই চাকুরিরত অবস্থায় আছি, বাসায় বানাতে চাইলেও পারিনা। তাই এখান থেকে নিয়ে বাচ্চাদের খাওয়াতে হচ্ছে। এখানকার খাবারগুলো এমনিতে স্বাস্থ্যসম্মতবাবেই বানানো হয়। এখানেও ঢেকে রাখা হয়। তাই নিতে পারি স্বাচ্ছন্দ্যে।

আরেক ক্রেতা আশিক বলেন, স্বল্প দামে এই দুর্দান্ত পিঠা হাতের নাগালে পেয়ে আমরা অনেক খুশি এবং আনন্দের সাথে এই পিঠা খাচ্ছি। শীতকালে ঐতিহ্যবাহী বাংলার পিঠা খাওয়া হবে না, এটা অকল্পনীয়। শীতের পিঠা আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে চলে আসা একটা ঐতিহ্য। এটা খেতেও এসময় ভালো লাগে।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর