news2bdgazette@gmail.com সোমবার, ২০শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

খরায় ঝরে পড়ছে লিচু, লোকসানের শঙ্কায় চাষিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত:
৫ মে ২০২৪, ১৮:১৪

ফাইল ছবি

চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও তীব্র খরায় বিপাকে পড়েছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের লিচু চাষিরা। পরিপক্ব হওয়ার আগেই লিচু ঝরে পড়ায় লোকসানের শঙ্কায় চাষিদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।

জানা যায়, তীব্র তাপদাহে লিচু পাকার মাত্র এক সপ্তাহ আগে ফলগুলো কালো হয়ে ফেটে ঝরে পড়ছে।

এক সময় লিচু উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত দিনাজপুরের পাশাপাশি ঈশ্বরদী ও রাজশাহী এখন লিচু চাষে অগ্রগামী। অত্যধিক গরম ও বৃষ্টির অভাবে লিচুর গুণগত মান এবং উৎপাদনে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। চাষিদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ বিরাজ করছে, কেননা লিচু বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয় তাদের বছরের অনেক খরচ মেটায়। এই অঞ্চলের অনেক চাষি লিচু বিক্রি করে সংসারের খরচ চালানোর পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন।

চাষিদের এই বিপর্যয় মোকাবিলায় কৃষি বিভাগ ও সরকারি সহায়তা অত্যন্ত প্রয়োজন। কৃষি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিবর্তনশীল আবহাওয়া পরিস্থিতি ও বাজারের চাহিদা বুঝে চাষাবাদের পদ্ধতি উন্নত করতে হবে। চাষিদের ওপর এই বোঝাপড়া ও অবহেলা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করতে পারে, তাই অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, রাজশাহীতে এবার ৫৩০ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার ৮৬৫ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে চাষিরা বলছেন, আমের মতো এবার লিচুতেও ব্যাপক লোকসান হবে।

মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার লিচু চাষি সাব্বির হোসেন বলেন, গাছের গোড়ায় সকাল-বিকেল পানি ঢালছি। তবুও লিচু রক্ষা করা যাচ্ছে না। গাছের চেয়ে মনে হচ্ছে মাটিতেই বেশি লিচু পড়ে আছে। লিচু দেখতে কালচে হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও আকারে অনেক ছোট হচ্ছে।

রাজশাহী নগরীর মেহেরচণ্ডির এলাকার লিচুচাষি মুক্তার ভাণ্ডারি বলেন, তীব্র খরার কারণে গাছে ফেটে নষ্ট হচ্ছে লিচু। এমন ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আগাম গাছ থেকে লিচু নামিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। লিচুগুলো পরিপূর্ণভাবে পাকতে এখনও পাঁচ থেকে ছয়দিন সময় লাগবে। কিন্তু খরার কারণে গাছের গোড়ায় পানি দিয়েও কাজ হচ্ছে না।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা উম্মে ছালমা বলেন, তীব্র খরায় খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। এমতাবস্থায় লিচু রক্ষা করার জন্য সকাল-বিকেল গাছের গোড়ায় পানি দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে চাষিদের। বিকেলের পানিটা গোড়ার পাশাপাশি গাছের ওপরেও স্প্রে করে দিতে হবে। তাহলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, আম-লিচু প্রতিকূল আবহাওয়ারই ফল। খরা হবে, ঝড়-বৃষ্টি, শিলা হবে, এর মধ্যে দিয়ে এগুলো বড় হবে। তবে এখন বৃষ্টি প্রয়োজন। বৃষ্টি হলে পরিবেশটা ঠাণ্ডা হবে। তখন আর ঝরে পড়বে না।

 


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর