news2bdgazette@gmail.com সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবন্ধী পরিবার নিয়ে আছিয়ার সংগ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত:
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ২০:০০

ফাইল ছবি

৬০ বছর বয়সী আছিয়া বেগম, তার দৃষ্টিহীন স্বামী, প্রতিবন্ধী পুত্র ও নাতির সাথে মিলে এক অসহায় জীবন যাপন করছেন, যেখানে মাথা গোঁজার ঠিকানা পর্যন্ত নেই। এই পরিবারের কাহিনী যেন বলে দেয় সমাজের এক নিষ্ঠুর বাস্তবতা। কোনো এক সময়ে অন্যের জমিতে একটি ছোট আশ্রয় হারিয়ে তারা এখন আকাশের নিচে এক মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জীবন যেন এক একটি সংগ্রামের গল্প। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে দেখা যায় অসহায় আছিয়া বেগমের সংগ্রামী জীবনচিত্র।

আছিয়া বেগমের পরিবারের কষ্টের কাহিনী আমাদের সামনে একটি প্রশ্ন রাখে—সমাজের এই অবহেলিত, নিপীড়িত মানুষেরা কি কোনোদিন ন্যায্য সামাজিক নিরাপত্তা পাবে? তাদের জীবনের এই অনিশ্চয়তা ও দুর্দশা কি কখনো শেষ হবে?
সমাজ ও সরকারের উচিত এই ধরনের পরিবারগুলোর প্রতি আরো সহানুভূতিশীল হওয়া এবং তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট সহায়তা করা। আছিয়া বেগমের মতো পরিবারগুলো যাতে একটি মানসম্মত জীবন যাপন করতে পারে, তার জন্য প্রয়োজন সমগ্র সমাজের একযোগে প্রচেষ্টা করা বলে মনে করছেন অনেকে।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, এই পরিবারের লড়াই এবং তাদের অদম্য সাহস আমাদের সমাজের জন্য একটি শিক্ষা। তারা শুধু বেঁচে থাকার জন্য নয়, একটি সম্মানজনক জীবনের আশায় প্রতিদিন লড়াই করে চলেছে। তাদের এই লড়াই আমাদের সমাজের অন্যান্য সদস্যদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা এবং একসাথে মানবতার জয়গান হোক।

এ বিষয়ে আছিয়া বেগম বলেন, নিরুপায় হয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্বামী, প্রতিবন্ধী ছেলে ও প্রতিবন্ধী নাতীকে নিয়ে ১৫ দিন থেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। খাওয়ার কিছুই নেই। ক্ষুদা লেগেছে তাই বাজার থেকে এক কেজি চাল ও এক কেজি বেগুন নিয়ে এসেছি। এগুলো এখন রান্না করছি। কথায় যাবো, কি করবো, কিছুই বুঝতে পারছিনা।

তবে আছিয়া বেগম দাবি করেন, সরকার ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে ঘর দিচ্ছেন। সরকারিভাবে গুচ্ছ গ্রাম বা কথায় একটু ব্যবস্থা করে দিলে প্রতিবন্ধী স্বামী, সন্তান ও নাতীকে নিয়ে বাকি জীবনে কিছুটা হলেও সুখ মনে করতাম।

এদিকে আছিয়া বেগমের মেয়ে ঝর্না বেগমের বিয়ে হয়ে স্বামীর সাথে সংসার করছেন। ছেলে ইকবাল হোসেন স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করছেন। আরিফ হোসেন নামের আরেক ছেলেকে ২০১৮ সালে কে বা কারা হত্যা করে মাঠের মধ্যে লাশ ফেলে রাখা হয়েছিল। আতাউল হোসেন নামের আরেক সন্তান কয়েক বছর থেকে নিখোঁজ রয়েছে। তার সন্ধান আজও পায়নি। এ কথাগুলো বলতে বলতে আছিয়া বেগম হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন।

এ বিষয়ে আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, এর আগেও এখানে এসে কিছুদিন ছিল। আবারও হঠাৎ দেখছি ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে আছিয়া বেগম তার পরিবার নিয়ে বসে আছেন। তাদের সাথে কখা বলেছি, তাদের থাকার কোন জায়গা নেই। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিব।


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর